দুর্নীতিবাজদের হাতে এখন রেকর্ড পরিমাণ কালো টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বিশ্লেষণে মিলেছে এমন তথ্য। এসব টাকা উদ্ধার ও দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তারে শিগগির শুরু হচ্ছে যৌথ বাহিনীর অভিযান। বিতর্ক এড়াতে সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা চেয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
গত শুক্রবার সাবেক সচিব শাহ কামালের মোহাম্মদপুরের বাসায় মেলে বস্তা বস্তা টাকা। সেই সঙ্গে ছিল বৈদেশিক মুদ্রা। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন ঝালকাঠিতে আমির হোসেন আমুর বাসায়ও মেলে কয়েক কোটি টাকা। পরদিন বরিশালে কোটি টাকা নিয়ে পালানোর সময় আটক হন এক প্রকৌশলী।
গত এক দশকের অপশাসনে ব্যাংক লুট, কর ফাঁকি, ঘুষ-কমিশন-চাঁদার মাধ্যমে ফুলে ফেঁপে উঠেছেন হাজারো মানুষ। তালিকায় আছেন রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আমলা, পুলিশ, বিচারক, প্রকৌশলীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। বিদেশে পাচারের পাশাপাশি কালো টাকার বড় একটি অংশ দেশে রেখেছেন অনেকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, গত জুন পর্যন্ত মানুষের হাতে ছিল রেকর্ড পরিমাণ নগদ টাকা, তিন লাখ কোটির বেশি। মে মাসে যার পরিমাণ ছিল দুই লাখ ৭১ হাজার কোটি টাকা। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, দুর্নীতিবাজদের একটি অংশ আতঙ্কে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছেন।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘অনৈতিক উপায়ে যারা অর্থ উপার্জন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই অভিযান পরিচালনা করতে হবে। অন্যায়কে অন্যায় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেই সঙ্গে অন্যায়কারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’
এরই মধ্যে শীর্ষ কিছু দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে আরও বড় পরিসরে অভিযান চালানোর ঘোষণা আসতে পারে। সেনাবাহিনী ছাড়াও আরও চার সংস্থার সমন্বয়ে হবে বেশকিছু টিম। সারা দেশে চলবে অভিযান।
তবে এক এগারোর যৌথবাহিনীর অভিযান থেকে শিক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা। কারণ তখন বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘প্রথম কথা হলো যে, অভিযান পরিচালনা করা হবে সেটি যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় হতে হবে। সঠিকভাবে ঘোষণা দিয়ে একাধিক সংস্থার সমন্বয়ে এই অভিযান পরিচালনা করা উচিত।’
নিউজটি আপডেট করেছেন : Matribhumir Khobor